Make love, Not scars

এসিডে দগ্ধ হয়ে বেঁচে যাওয়া রেশমা কোরেশী ফ্যাশন শো র‍্যাম্পের মডেল হয়ে সবার মন জয় করে নিল। নিউইয়র্ক বেইজড বিখ্যাত প্রডাকশন কোম্পানী FTl Moda র আয়োজিত ফ্যাশন শো’তে রেশমা মুম্বাইএর ডিজাইনার অর্চনা কোচারের বানানো গাউন এর মডেল হয়ে রানওয়েতে উঠে।

সাধারনত ক্যাটওয়াক মডেল হয় সব সেরা সুন্দরীরা। রেশমা ছিল ব্যতিক্রম। এসিডে তার এক চোখসহ মুখের একপাশ সম্পুর্ন ঝলসে যায়। কিন্তু এসিড দগ্ধ মানুষদের নিয়ে কাজ করা একটা মানবিক সংগঠনের আহবানে সাড়া দেয় মুম্বাইয়ের ডিজাইনার এবং নিউইয়র্কের ফ্যাশন শো’র আয়োজকরা।

উনিশ বছরের ভারতীয় রেশমা দগ্ধ চেহারা নিয়ে মডেল হয়ে শুধু সবার মনই জয় করে নাই – এত বড় বিপর্যয়ের পর ও তার অসীম মনোবল এবং আশার কথা শুনে অশ্রু সজল সকল মানুষের বাহবা কুড়িয়েছে। সে বলে মানুষের ভালবাসায় সে এখন আগের চাইতে নিজেকে আরো বেশী সুন্দরী মনে করে।

দুই হাজার চৌদ্দ সালে রেশমা তার বোন এবং দুই আত্মীয় সহ উত্তর ভারতের কোন এক শহরে বেড়াতে গিয়েছিল। তার বোনের সাথে দ্বন্দে জড়িয়ে থাকা বোন জামাই ও তার সহযোগীরা তাদেরকে আক্রমন করে বসে। রেশমাকে চেপে ধরে তার মুখের উপর সালফিউরিক এসিড ঢেলে দেয়। এর ফলে রেশমার বাম চোখ সম্পুর্ন ঝলসে যায় এবং মুখের এক পাশ বিকৃত হয়ে যায়। এই ঘটনার পর সে তার দেশের সরকারের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পায় নাই চিকিৎসার জন্য। কিন্তু তার সাহায্যে এগিয়ে আসে এসিড দগ্ধ মানুষের সাহায্যকারী সংস্থা #MakeloveNotscarsসেই থেকে রেশমা এই সংগঠনের #EndAcidSale ক্যাম্পেইনের মুখপাত্র হিসাবে কাজ করছে। এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য হল ভারতে এসিড বিক্রির উপর কড়া আইন চালু করা।

অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেশমা বলে – “নিজের মনকে সুন্দর কর। বাইরের সৌন্দর্যই সব নয়। অন্তরের সৌনদর্যই আসল।

সে নিজেকে ভিকটিম মনে করে না। তার কথা হল – “আমি তো এই অশুভ আক্রমন থেকে বেঁচে গেছি। মরে যাই নাই। তাহলে আমি ভিকটিম হলাম কেমন করে ?” সে আরো বলে – আগের চাইতে আমি এখন আরো অনেক বেশী সুখী মানুষের ভালবাসা পেয়ে।

ভারতে প্রতি বছর এক হাজারের ও বেশী মানুষ এসিড দ্বারা দগ্ধ হয়। এবং তার বেশীর ভাগ মানুষই নারী। এক পরিসংখ্যানে বলা হয় ২০১২ সালের তুলনায় এই এসিড আক্রমন ২৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে।

উৎস – ডেইলী নিউজ, নিউইয়র্ক। অনুবাদঃ মুরাদ হাই, নিউইয়র্ক। ৯ই সেপ্টেম্বর,২০১৬