#উত্থান২  – Rise of a Thug

পুলিশ খুন করে ভয়ে সেঁদিয়ে গেলো পিস্টন। বস্তিতে ফিরে এসেও তার বুকের ধুকপুকানি কমে না। বাইট্টাকে কিল ঘুষি মেরে নাস্তানাবুদ করে ফেললো।

বলে – অই হারামজাদা, তরে কেডায় কইছিলো গুলি চালাইতে। বেডার হাতে কি কোনো বন্দুক দেখছত তুই ! ক্যান গুলি চালাইলি পয়লা দিনেই ?

বাইট্টা উত্তর দেয় – হুন, ইচ্ছা কইরা গুল্লি করসি নাকি ! বেডায় পুলিশ, এইডা হুইনাই আমি ডরায়া গেছিগা। ভাবসি, হ্যারে না মারলে যদি আমাগোরে উল্টা মাইরা ফালায়, এই ডরে মাইরা ফালাইছি।

পরে অভয় দিয়ে বলে – এতো ডরাস ক্যান ! দেকবি কিস্সু অইবো না। দুই চাইরডা লাশ না ফালাইলে সাহস বাড়বো না। আমাগো বাজার দর বাড়বো না। ডরাইস না। তুই তো আমার ওস্তাদ বেডা। উপ্রে উডনের লেইগা আরো কত খুন করুন লাগবো, দেহিস।

তারপর চোকির তলা থেকে একটা বোতল বের করলো। দুইটা গেলাসে ঢাললো একটু করে। পিস্টনের দিকে একটা গেলাস এগিয়ে দিয়ে বলে – এক ঢোকে গিল্লা ফালা। দেখবি কাঁপুনি গেসে গা। মনে সাহস আইবো।

একের পর এক পেগ খেয়ে যাচ্ছে দুই বন্ধু মিলে, বস্তি ঘরের তারে ঝুলতে থাকা টিমটিমে আলোতে কাত হয়ে শুয়ে। অপারেশন শেষে অস্ত্র এবং চুরির মালগুলি অন্ধ বুড়ির ঝুপড়িতে রেখে এসেছে বাইট্টা। আর কোন চিন্তা নাই। নিশ্চিন্ত মনে গুনগুন করছিলো বাইট্টা। পিস্টনের কাঁপুনি কমে গেলো। স্থির চোখে এবার ঝুলতে থাকা বাতিটার দিকে তাকিয়ে রইলো সে।

বাইট্টা কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে – মাল লাগাবি ? তাইলে দেখবি একদম টেনশন উইরা চইলা যাইবো।

উত্তরের অপেক্ষা না করে পিস্টনকে টেনে উঠিয়ে নিয়ে কয়েক ঘর পরে জরিনার ঘরে গিয়ে টোকা দিলো। ভিতর থেকে খেঁকিয়ে উঠে মেয়ে কণ্ঠ জিজ্ঞেস করে – কেডায় ?

বাইট্টা আস্তে করে উত্তর দেয় – আমি বাইট্টা, খুলো। দোস্ত রে লইয়া আইসি।

জরিনা পিস্টনের খবর জানে। ভয় পায়। কিন্তু মনে মনে স্বপ্ন দেখে পিস্টনকে আপন করে নেয়ার। সুযোগ পায় না। আজ যখন শুনলো বাইট্টা পিস্টনকে সাথে করে নিয়ে এসেছে, সে লাফিয়ে উঠে বেড়ার দরজা খুলে বের হলো।

বলে – আরে ‘ভাই ‘ আহেন, আহেন। ঘরে আহেন। কি কপাল আমার !

হাত ধরে ঘরে নিয়ে বসালো পিস্টনকে। বাইট্টা ওর কাছে গিয়ে বলে – তাইলে তুই থাক জরিনার কাছে। আমি পরে আইসা তরে নিয়ে যামু।

পিস্টন খপ করে বাইট্টার হাত ধরে ফিসফিস করে বলে – আমি তো কোনোদিন ‘করি’ নাই। জানি না কিছু।

বাইট্টা তার ঘাড়ে চাপ দিয়ে বলে, ভাবিস না। হেয় তরে খুব বালা পায়। শিখায়া লইবো। বলে বের হয়ে গেল।

বাইট্টা বের হলে জরিনা ঘরের দরজা টেনে দেয়। কলসি থেকে ঠান্ডা পানি ঢেলে খেতে দেয় পিস্টনকে। পানিটা এক নিঃশ্বাসে শেষ করে খুব তৃপ্তি পেলো সে। মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। বুকের ভিতর ঢিব ঢিব করতে থাকা নিজের হার্টবিটের আওয়াজ যেন নিজেই শুনতে পাচ্ছে। চুপ করে শুয়ে বাল্বের দিকে তাকিয়ে রইলো।

জরিনা তার পায়ের কাছে বসে পায়ে হাত বুলাতে শুরু করলো। খসখসে পা। উঠে গিয়ে তেলের শিশিটা আনলো। হাতের তালুতে তেল নিয়ে ঘষে পিষ্টনের পায়ে ডলতে শুরু করলো।

বিশ বাইশ হবে তার বয়স। সুঠাম দেহ বল্লরী। রান্না করে টিফিন ক্যারিয়ারে করে হলের রুমগুলিতে খাবার সাপ্লাই দেয়। এতে তার ভালো রোজগার হয়।নিজে খেয়ে পরে গ্রামে মায়ের জন্যও টাকা পাঠায় মাসে মাসে।

সেই কোনকালে একবার বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর অভ্যাস খারাপ, শুরুতেই ধরতে পেরেছিল। পাশের বাড়ির বয়স্ক মহিলার ঘরে যেত। বেটার গায়ে অন্য মহিলার সুবাস পেয়ে সইতে না পেরে একরাতে বটি দিয়ে কুপিয়ে মেরে রাতারাতি গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে ঢাকায় এসে এই বস্তিতে উঠেছে। এখানে তাকে ছায়া দিয়েছে অন্ধ বুড়ি। সবাই বুড়িকে মান্য করে। তাই সমস্যা হয় না। শুধু বাইট্টা তাকে এটা সেটা কিনে দেয়। ভাল ব্যবহার করে। বন্ধুর মতো সম্পর্ক। তাই তাকে সে পাত্তা দেয়। কিন্তু তার ভালো লাগে জুলহাস মানে পিস্টনকে। সে কথা বাইট্টাকে সে জানিয়েছে। আজ সুযোগ পেয়ে সে পিস্টনকে তার ঘরে এনে দিয়েছে।

যাওয়ার সময় জরিনার কানে ফিসফিস করে পিস্টনের দেখা শুনা করতে বলে গেল বাইট্টা।

পায়ে হাত বুলাতে শুরু করলে একটু পরেই পিস্টনের নিঃশ্বাস ঘন হলো। এর আগে সে কখনো কোন নারীর স্পর্শ পায় নাই। চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। ফোঁস ফোঁস আওয়াজ হচ্ছে নিশ্বাসের। তাতো হবেই। টিমটিমে আলোতে জরিনা খেয়াল করলো পিষ্টনের পিস্টন স্ফীত হতে শুরু করেছে। সে আর দেরী না করে ঘরের বাতিটা নিভিয়ে দিলো। তারপর তার পাশে শুয়ে জড়িয়ে ধরলো।

ঠিক তখুনি চারিদিক আলোকিত করে ফ্লাড লাইট জ্বলে উঠলো। কেউ ঘরের বেড়ার দরজাটা টেনে খুলে ফেললো। জরিনা লাফ মেরে উঠে একপাশে সরে গিয়ে বুকের আচল ঠিক করে দা হাতে নিয়ে হুংকার দিয়ে উঠলো – কোন হারামীর বাচ্চা তুই, সাহস থাকলে সামনে আয়।

বুট জুতার আওয়াজ তুলে বন্দুক হাতে ঘরে ঢুকলো কয়েকজন পুলিশ। একজন চিৎকার করে বলে, ওস্তাদ পাইসি।

পিস্টন একটুও না নড়ে একইভাবে বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। মদের প্রভাব আর জরিনার শরীরের গন্ধ মিলিয়ে তার নেশা তখন চরমে পৌঁছে গেছে।

একটু পর ঘরে ঢুকলো ওসি সাহেব। পিস্টন তাকে চেনে। কিন্তু ওসি তাকে কখনো দেখে নাই। তাই জিজ্ঞেস করলো – তুই কে রে !

পিস্টন ঠান্ডা গলায় জবাব দেয় – আমি পিস্টন।

শুনে ওসি ভ্যাবাচ্যাকা খেলো একটু। সামলে নিয়ে বলে – যাক শেষ পর্যন্ত দেখা মিললো তাইলে। আজকের খুনটা কি তোর কাম নাকি !

পিস্টন একটুও ভয় না পেয়ে বাইট্টার কথা না বলে খুনের সব দায় নিজের উপর নিলো। অবলীলায় উত্তর দেয় – আমি ছাড়া এই এলাকার আর কার এমুন সাহস হইবো, কন !

এতো সোজা সাপ্টা উত্তর ওসি সাহেব আশা করে নাই। শুনে ঢোক গিললো। এবার পিস্টনের উত্থিত শিশ্নের দিকে তাকিয়ে বলে – যন্তর হেভি হিট খায়া আছে দেখি। ফিট করাইবা ? আচ্ছা করাও। তয় কাইল সকালে থানায় আইসা আমার সাথে দেখা করবা। বাকি কথা পরে হইবো। গেলাম।

বলে ওসি তার দলবল নিয়ে বের হয়ে গেলো।

নীলক্ষেত ফাঁড়ির ওসি পঞ্চাশ লাখ টাকা উপরি দিয়ে জেলা শহর থেকে ঢাকায় বদলি হয়ে এসেছে মাস তিনেক আগে। চোখে অনেক বড় স্বপ্ন তার। সে জানে একা পারবে না। টাকা উপার্জন করতে হলে অপরাধ জগতের সাঙ্গপাঙ্গ লাগে। ইউনিভার্সিটির পোলাপান ধরে তো কিছু পাওয়া যায় না। উল্টো বিপদ হয়। ছিঁচকে চোর চ্যাঁচোড় অনেক পেলেও ওদের দিয়ে রোজগার ভাল হয়না। ভালো এবং শক্ত কোন অপরাধীকে খুঁজছিলো সে মনে মনে। পিস্টনকে পেয়ে সে যেন আকাশের চাদ হাতে পেলো। ঠোঁটের কোনায় চিকন হাসি দেখা দিলো।

এবার তার কপাল ফিরবে মনে হয়। মন্ত্রীর ভাগও ঠিকমতো দেয়া যাবে। হ্যাঁ, সরাসরি মন্ত্রী ধরে নগদ টাকা ঘুষ দিয়ে সে ঢাকায় এসেছে চুক্তি করে। সব কিছুর ভাগাভাগি এই শর্তে। বিনিময়ে মন্ত্রী তাকে রক্ষা করে চলবে। কেউ তার টিকিও ছুঁতে পারবে না। এইতো সেদিন এক ডিআইজি ফোন করেছিল তাকে। সে ছিল না ফাঁড়িতে। এসে জানলো এস,আইয়ের কাছ থেকে। শুনে পাত্তাও দিলো না। কলব্যাক পর্যন্ত করলো না। ডিআইজি তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ওরা বইয়ে লেখা নিয়ম ধরে চলে। আর ওসি চলে নিজের নিয়মে। শুধু মন্ত্রীকে জমা খরচ দিতে হয় চাকরি বাঁচাতে।

ওসি বের হয়ে যেতেই পিস্টন উঠে দাঁড়ালো। তার উত্তেজনা শেষ। মনে মনে ভাবতে শুরু করলো – ভুল হয়েছে এভাবে এখানে আসাটা। এই ওসি না হয়ে অন্য কেউ হলে এতক্ষনে কোমরে ডান্ডা বেড়ি পরিয়ে হাজতে নিয়ে ঢোকাতো। আরো সাবধান হতে হবে।

এতক্ষণে তার রাসুর কথা মনে পড়লো। সে মনে মনে সব কিছুর জন্য রাসুকে গুরু মানে। রাসুর নীতিগুলি তার ভাল লাগে খুব। অপরাধ করলেও রাসু খুব ভদ্র ছিল। কারো সাথে খামোকা দুর্ব্যবহার করতো না। তাকে বলতো – কখনো কারো কাছে নিজেকে দুর্বল দেখাতে হয় না। তাইলে তুই শেষ। আরেকটা কথা মনে রাখবি। সব সময় প্রথম আঘাতটা নিজে করবি। তাইলে দেখবি তোর অপোনেন্ট ভয় পেয়ে যাবে।

রাসুর কথা ভেবে চোখের কোনে একটু ভিজা অনুভব করলো। আরে, একি কাণ্ড ! আমি কি কাঁদছি নাকি ? ধুর ! বলে নিজের চোখ মুছে ফেললো।

কাপড় পরে উঠে দাঁড়ালো। জরিনাকে আস্তে করে বলে – তোমার সাথে পরে কথা হবে। ভাল থেকো। বলে বাইরে বের হতেই দেখে বাইট্টা তার জন্য অপেক্ষা করছে।

তাকে দেখে পিস্টন বলে উঠলো – এক হাইঞ্জা বেলায় তুই আমারে দুইবার বিপদে ফেললি কিন্তু। দুইবারই অল্পের জন্য রেহাই পাইলাম।

তারপর বলে – শুন, আর বস্তিতে থাকন যাইবো না নিরাপদ না। হলে থাকতে হইবো।

রাতটা তারা দুজন বুড়ির ঘরে কাটালো। পরদিন সকালে নাস্তা না খেয়ে ওসির সাথে দেখা করতে গেলো পিস্টন।

গিয়ে দেখে ওসি তার জন্য অপেক্ষা করছে। টেবিলে নাস্তা ঢেকে রাখা। তাকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে হ্যান্ড শেইক করে বলে – আসো, আগে নাস্তা করি। পরে কথা কমু।

চিটাগাং হোটেলের নাস্তা। দেখেই সে চিনলো। অনেকবার এনেছে রাসুর জন্য। রাসু অর্ধেক খেত। বাকিটা ওকে খেতে বলতো। তারপর ভাগাভাগি করে চা খেতো।

নাস্তা খেলো। খেয়ে চায়ে চুমুক দিলো। ওসি কুদ্দুস কথা শুরু করলো। বলে, তোমার খুনের মামলা আমি দেখুম। নাম নিশানা থাকবো না তোমার। তয় তুমি আমার দিকে খেয়াল রাইখো। মাসে একটা থোক টেকা দিবা আমারে। আমিতো একা না। মন্ত্রী হালারেও দিতে হয়। বুঝোই তো।

পিস্টন শুধু শুনে গেল। কিছু বলল না।

ওসি এবার আবার বলে – তোমার তো ছাত্রদের নিয়ে দল আছে। এখন থেকে রাতের বেলায় অন্য কোথাও না। হলে গিয়ে একেকদিন একেক রুমে ঘুমাবা। বুঝলা ! লোকজন দিয়া কাম করাবা। নিজে সিনে কম থাকবা। চেহারা কম দেখাবা। তাইলে বিপদ থেকে দুরে থাকতে পারবা।

এই কথা গুলি তার মনে ধরল। পিস্টনও এমন মনে মনে ভাবছিলো।

ওসি আবার বলে – দরকারে মানুষ খুন করো, আপত্তি নাই। কিন্তু আর কখনো পুলিশ মাইরো না। গায়ে লাইগা যায় কিন্তু।

পিস্টন জিগায় – যেটা মারলাম, সেই মামলার কি হইবো, শুনি। শুনলাম এই পুলিশ নাকি রিটেড।

কুদ্দুস পয়লা বুঝে নাই পিস্টন কি শব্দ বল্ল। এক মুহূর্ত পরে বুঝল সে আসলে রিটায়ার্ড বলতে চেয়েছে। হাসি চলে এলো। না হেসে চেপে গিয়ে বলে – হ্যাঁ ঠিক শুনেছ। উনি রিটায়ার করেছেন বেশ অনেকদিন আগে। ডিআইজি ছিলেন।
ঐ কেইস আমার এলাকায় পড়েছে। আমি দেখবো ওটা। তুমি ভেবো না।

আমার কিছু যন্ত্র লাগবো। লোকজন বাড়ছে দলে। – পিস্টন জানায়।

দিক ওদিক তাকিয়ে ওসি লোহার আলমারি খুলে দুইটা কাটা রাইফেল, এক ব্যাগ কক্টেল, দুইটা রিভলবার বের করে দিলো। সাবধান করলো যেন না হারায়।

একটা বাজারের চটের ব্যাগে জিনিসগুলি ঢুকিয়ে পিস্টন থানা থেকে বের হয়ে এলো। বাইরে এসে বাইট্টার হাতে ব্যাগটা দিয়ে বলে – এগুলি বিলি করে দে আমাগো দলের পোলাপানের ভিত্রে।

ব্যাগের ভিতর উঁকি দিয়ে বাইট্টার দুই চোখ চকচক করে উঠলো খুশীতে।

তারপর দুই বন্ধু রিক্সায় উঠে ক্যাম্পাসের দিকে গেলো। বাইট্টা বলে উঠে, ধুর ওস্তাদ, রিক্সায় আর মানায় না। এক্কান ভটভটি দরকার।

না বুঝে ওর দিকে তাকালে বাইট্টা কয় – আরে বুঝস নাই ! মোটরসাইকেল লাগবো এক্কান। রিক্সা টিএসসির কাছে গেলে তাকে শাহবাগের দিকে যেতে বলল বাইট্টা।

শাহবাগে ডায়বেটিক হাসপাতালের সামনে সার বেঁধে অনেকগুলি বাইক দাড় করানো আছে। বাইট্টা পিস্টনরে জিগায় – তর কোন রং পছন্দ আছে নাকি রে!

পিস্টন মাথা নাড়ে।

বাইট্টা এগিয়ে যায় বাইক স্ট্যান্ডের দিকে। চোখ পড়ে চকচকে নতুন একটা বাইকের দিকে। এগিয়ে গিয়ে মুহূর্তে লকটা ভেঙ্গে চাকুর আগা ঢুকিয়ে স্টার্ট করে ফেলল বাইক। ভোঁ করে চালিয়ে পিস্টনের সামনে এলে সে পেছনে উঠে বসলো। হাতে বাজারের ব্যাগটা ধরা আছে।

গেইট দিয়ে বের হয়ে শাহবাগের মোড়ে এসে ক্যম্পাসের দিকে টার্ন নিতেই ফুলের দোকানের সামনে বাইকের উপর বসে থাকা সার্জেন্ট হাত তুলে থামালো ওদেরকে। থামলে উঠে সামনে এগিয়ে এলো সার্জেন্ট। এসে কাগজ দেখতে চাইলো বাইকের।

বাইট্টা কিছু বলতে গেলে তাকে খোঁচা দিয়ে থামিয়ে পিস্টন নিজে কথা বলার ভার নিলো।

বলে, স্যার কাগজ তো লগে নাই। এখন কি করবেন !

সার্জেন্ট এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে, দুই হাজার লাগবে। নইলে বাইক রেখে যেতে হবে।

শুনে পিস্টন বাজারের ব্যাগের ভিতর হাত ঢূকালো। একটা রিভলবার বের করে সার্জেন্টের অনেক স্ফীত পেটের দিকে তাক করলো।

তারপর বলে – আমার দেওনের অভ্যাস নাই, আছে শুধু নেওনের। বেশী তাফালিং করলে এখুনি লাশ বানায়া ফালামু কইলাম।

সার্জেন্ট কোমরের হোলস্টারে হাত দিতে গেলে এবার পিস্টন বলে – হুনেন মিয়া, আপনের কোমরের মালে জং ধইরা আছে গুল্লি না ফুটাইতে ফুটাইতে। মাগার আমারটা একদম তেল দিয়ে পালিশ করা। খালি টিপুম আর সাঁই সাঁই কইরা গুল্লি বাইর হইয়া আপনের বস্তা ফুটা কইরা ফালাইবো।

এবার ভয় পেলো সার্জেন্ট। ঘামতে শুরু করলো। ঠোঁট চাটতে গিয়ে দেখে একদম শুকনা হয়ে আছে। এত ভয় আর কখনো পায় নাই বেচারা। গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছিলো না।

তবুও চিঁ চিঁ করে বলে – আপনারা যান, স্যার। আমার ভুল হইছে। মাফ করে দেন।

শুনেই ভোঁ করে বাইক নিয়ে হাওয়া হয়ে গেলো বাইট্টা।

৫ই জুন, ২০১৮

পরের পর্ব ঃ #উত্থান৩