ভাল মানুষ

জন্মের বিচ্ছু পোলা সে। কালী মন্দিরের কাছে বাসা থেকে কখনো হেঁটে কখনো রিকসায় চড়ে কলেজে আসত দুলাল। আমি আসতাম ছয় নম্বর বাসে চড়ে। আট আনা ভাড়া ছিল। আল হেলাল হোটেলের পাশে আরামবাগে নটরডেম কলেজে পড়ি আমরা তখন। কলেজের পরিবেশে বিদেশী ভাব। অনেক গাছপালাও বিদেশী যা আগে অন্য কোথাও দেখি নাই। বাস্কেটবল খেলা কি জিনিস জীবনে প্রথম এই কলেজে ঢুকে জানলাম। আমাদের প্রিন্সিপালসহ অনেক টিচার ও আমেরিক্যান সাদা মানুষেরা ছিল। ক্যাথলিক ফাদাররা মুলতঃ এই কলেজ চালাতো তখন। হাইস্কুলের শাসন একদম ঢিলেঢালা ছিল বলা যাবে না। কিন্তু এই কলেজে ভর্তি হয়ে নিয়ম কানুন এতই কড়া ছিল যে মনে হত যেন জেলখানা। উনিশ বিশ হলেই ধরা পড়ে যেতাম। এমন সব নিয়ম কানুন ছিল যে ফাঁকি দেয়ার কোন কায়দাই ছিল না। যে দু’চারজন চেষ্টা করেছিল,তারা চোখের পলকে রাশটিকেট পেয়ে কলেজ থেকে চিরবিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি, এমন কড়া নিয়ম কানুন না থাকলে আমি এবং আমার বাউন্ডুলে বন্ধুদেরকে লাগাম পরিয়ে রাখতে পারত না কলেজ ,নিঃসন্দেহে বলা যায়।

সেই সময়ে দেশে দুইটা মাত্র সেরা কলেজ ছিল। তার ভিতর ঢাকা কলেজে মেট্রিকের রেজাল্টের ভিত্তিতে এডমিশন হত। কিন্তু নটরডেম কলেজে মার্কস ছাড়াও লিখিত এডমিশন টেস্ট দিয়ে পাশ করতে হত। তারপর ছিল ভাইবা। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ভর্তি হওয়ার ব্যাপার ছিল। যদিও আমার স্বপ্ন ছিল ঢাকা কলেজে পড়ার। কিন্তু আগে থেকে চরম আড্ডাবাজ ছিলাম বলে বাসা থেকে আমাকে ঢাকা কলেজে এপ্লাই করার সুযোগ পর্যন্ত দেয়া হয় নাই।

আই,কম এ দুইটা গ্রুপ ছিল। আমরা গ্রুপ বি’তে ছিলাম। কলেজের জীবন এমনিতে খুব কম সময়ের জন্য। তার উপর প্রতি সপ্তাহে ক্রমাগত ক্লাস টেস্ট এর চাপে রেখে কারো সময় ছিল না ক্লাসের সবার সাথে অনেক বেশী অন্তরংগ হবার। আমাদের গ্রুপে পুরান ঢাকার পোলাপান বেশী ছিল।দুলাল তাদের ভিতর একজন। কুচকুচে কালো মানুষ সে। কিন্তু পরে আসত ধবধবে সাদা বেলবটম প্যান্ট এবং খুব টাইট আর ছোট সাদা শার্ট। সেই শার্টের কলার ছিল প্লেইনের ডানার মত বিশাল বড় বড়। শার্টের বোতাম বুকের কাছে তিন চারটাই খোলা থাকত। গলায় ঝুলত সোনার চেইন। পায়ে চার পাঁচ ইঞ্চি উচুঁ হাই হিল জুতা। এটাই আসোলে সেই সময়ের হট ফ্যাশন ছিল। ওরে দেখতে ভারতের মালয়ালম সিনেমার নায়কদের মত লাগত। আড়ালে আবডালে আমরা ওকে নিয়ে হাসাহাসি করতাম। আবার ভয় ও পেতাম। কেমন জানি মাস্তান টাইপ মনে হত। সাহস ছিল মনে – কারন কলেজ আমাদের স্কুলের এলাকার ভিতর ,মানে মতিঝিল কলোনীর পাশে। এক ডাক দিলে সব বন্ধুরা দৌঁড়ে চলে আসবে। অবশ্য তার কোন দরকার হয় নাই কোন দিন।

আগেই বলেছি ,দুলালের সাথে কখনো চোখাচুখি করি নাই । কিছুদিন যেতেই দেখি – নাহ, ছেলে তো খারাপ না। টিচার কিছু জিজ্ঞেস করলে সবার আগে হাত উঠায়। তবে কথা বলার সময় একটু খ্যাত মনে হত ,মানে ঢাকাইয়া টানে কথা বলত। একদিন তো পেছনের বেঞ্চ থেকে আমরা কয়েকজন হো হো করে হেসেই দিয়েছি ওর কথা শুনে। আমাদের হাসি শুনে দুলাল ঘাঁড় বেঁকিয়ে পেছনে তাকালো। আমাদের সাথে চোখাচুখি হতে কালো চেহারায় বত্রিশ পাটি সাদা দাঁত বের করে হেসে দিল সেও। সেই হাসিতে ছিল সরলতা, বন্ধুর মত।

তারপর থেকে টুকটাক কথা হত। ঘনিষ্ঠতা হয় নাই। টিফিন পিরিওডে আমরা কয়েকজন কলেজের ক্যান্টিনে কাটাতাম সবসময়। ক্যারম বোর্ড , টেবিল টেনিস খেলা হত। তাছাড়া আমাদের কলেজের ক্যান্টিনে জীবনের প্রথম চিকেন কাটলেট ,বিফ বার্গার খেয়েছি। সেই খাওয়ার লোভে ক্যান্টিন অনেক প্রিয় ছিল। দুলালকে দেখতাম না আশেপাশে। একদিন ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে খেলার মাঠের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি সাদা শার্ট, সাদা প্যান্ট পরা দুলাল মাঠে ফুটবল খেলছে অন্যদের সাথে। দুর্দান্ত ভাল খেলতে পারে। একে ওকে কাটিয়ে বল গোল পোস্টে ঢুকিয়ে দিচ্ছে কিক করে। টিফিনের পর ঘেমে নেয়ে শার্ট প্যান্ট ময়লা করে ,অনেক সময় প্যান্টের সেলাই খোলা নিয়ে দুলাল ক্লাসে ফিরে আসত। আস্তে আস্তে ঘনিষ্ঠ হতে লাগলাম আমরা।

বেশী ঘনিষ্ঠ হবার আগেই সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাস শেষ হয়ে টেস্ট পরীক্ষা হয়ে গেল। এইচ,এস,সি ও শেষ হয়ে গেল। তারপর আর কোন যোগাযোগ ছিল না দুলালের সাথে।

স্বপ্নপুরী ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবার পরীক্ষা দিতে গিয়ে দুলালকে দেখেছিলাম এক দুইবার। বেশী কথা হয় নাই। সবাই আল্লাহ আল্লাহ করছি চান্স পাবো কিনা সেই আশংকায়। আর কারো কথা ভাবার সময় ছিল না।

যাইহোক, ভালভাবে টিকে গিয়ে ক্লাস শুরু করে দিলাম। তখন দুলালকে দেখি নাই ক্যাম্পাসের কোথাও। চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। না দেখায় ওর কথা ভুলে গেলাম। কলেজ থেকে আমরা যারা ঢা ,বি’তে সুযোগ পেয়েছি ,প্রথম প্রথম তারাই শুধু একসাথে বসি, ঘুরি, গল্প করি। এভাবে বছর কেটে গেল। আমরা সেকেন্ড ইয়ারে উঠে গেলাম।

ঠিক সেই সময়ে একদিন দেখি দুলাল আবার উদয় হয়েছে ,ঢা,বি ক্যাম্পাসের কলা ভবনে ।
দেখা হতেই উচ্ছসিত হয়ে ছুটে এলো অনেক প্রিয় বন্ধুর মত।

এসেই বলে -” আবে দোচ ( দোস্ত ), কিমুন আছস ? কুনটায় পরস তোরা ?”

নিজেদের কথা জানিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করলাম সে এতদিন কোথায় ছিল। আর এখন হটাত কোত্থেকে উদয় হল। মুখে হাসি থাকলেও মনটা ভারী করে বলে –
” ধুর হালায় আর কইস না। এইহানে চান্স না পায়া চিটাগাং এ যায়া ভর্তি অইছিলাম। মাগার পোষায় নাইক্কা। ওইছব যাগার পোলাপান বালা না রে। খালি গিরিংগি করে। আমি হালায় ঢাকার পোলা। অগো লগে আমি ক্যাম্নে টিকুম, তরাই ক। হের লাইগা আয়া পরসি। এক বছর লস অইছে ,অউক গা। আমি আমার শহরে ফিররা আইসি। এইখানে ভর্তি অইসি। এইডাই বরো কতা। ”

খুশী লাগল। একসাথে ক্লাস করা হবে না। তবুও একই ক্যাম্পাস থাকবো । ডেইলী দেখা হবে সেটাই বড়কথা। আবার ক্লাস শুরু হয়ে গেল। সবাই ব্যস্ত। এর ভিতর চলার পথে এখানে ওখানে দুলালের সাথে দেখা হয়ে যায়। দেখা হলেই শুধু দুস্টামি আর দুস্টামি। আসোলে ঢাকায় ফিরে এসে সে যেন প্রান ফিরে পেয়েছে। সাদা শার্ট ,সাদা প্যান্ট বদলে গেছে ক্যাম্পাসের বাতাস লেগে। কথাও অনেক বদলে গেছে।

তখনো কেউ জানি না দুলালের পরিবার সম্পর্কে। আসোলে স্কুল কলেজে পড়ার দিনে. কে কার বাপ মায়ের খবর জানত ! মনে হয় কেউই না। সবাই সবার বন্ধু সেটাই আসল কথা ছিল। কার দালানবাড়ি আছে নাকি টিনের ঘর আছে ,এসব কোন মাথা ঘামানোর বিষয় ছিল না। সবাই বসে বিড়ি সিগারেট ফুঁকতাম। একজনের মুখের সিগারেট দশজন নিয়ে টানতাম। আরেকজনের চায়ের কাপে মুখ লাগিয়ে খেয়ে ফেলতাম কিছু না ভেবেই। এটাই তো মজা ছিল। গাড়ি চালিয়ে মাত্র দুই একজন ক্যাম্পাসে আসত। অনেকে না।

একদিন কেউ একজন দেখে ফেলল ,দুলাল বাংলা একাডেমির সামনে বিরাট বড় একটা গাড়ি থেকে নেমে তারপর রিকশায় চড়ে ক্যাম্পাসে এসেছে । এই খবর সেই কেউ এসে আড্ডায় জানিয়ে দিল। আমরা ক্লাসের পর দুলালকে ধরে বসলাম – শালা, তুইতো দেখি হেব্বি বড়লোক । গাড়ি নিয়া ক্যাম্পাসে আহো।তাইলে দেখাইতে এত লজ্জা ক্যানো ?

আমাদের হাসি ঠাট্টায় সে অপ্রস্তুত হয়ে কাঁদো কাঁদো চেহারা করে বলে – দোস্ত, তরা আমারে মাফ কইরা দে। আমি এগিনি দেখাইতে চাই নাই। আমার বালা লাগে না। রিক্সা পাইতাছিলাম না। ক্লাসের দেরী অয়া যাইতাছিল। হের লেইগা বাপের গাড়ি লয়া টাইনা চইলা আইছি। তরা আর কাউরে এই কতা কইস না। তগো পায়ে ধরি।
এই হল আমাদের দুলাল। সাদা সিধা মানুষ। কোন রকম ভাব নাই ।

আরেকদিনের কথা বলি।

আমরা যারা হলে থাকি, ভাল খাবারের লোভে ভাল রেস্তোঁরার খোঁজ খবর নেই। একদিন জানলাম কালী মন্দিরের কাছে খুব ভাল একটা বিরানীর দোকান আছে। দারুন কাচ্চি বিরিয়ানি বানায়। এক রিকশায় তিন জন করে চড়ে একদিন বিকেলে আমরা সেই রেস্তোঁরায় খেতে গেলাম। নাম হল – স্টার কাবাব এন্ড হোটেল। খুব মজার খাবার। খেয়ে মন ভরে গেল। বেয়ারাকে বিল দিতে বললাম। এর ভিতর সবাই পকেট থেকে যার কাছে যা আছে বের করে এক জায়গায় জমা করছিলাম।
বেয়ারা বিল আনে না। আবার ডাকলাম। বকা দিয়ে বললাম – কি রে ছ্যামরা, বিল নিবি না নাকি ?
সে হেসে বলে – দেওন লাগবো না। যান গিয়া।

এইকথা শুনে তো সবাই টাস্কি খেয়ে গেলাম। এমন কথা তো শুনি নাই কোন দিন। একজন বলে, আরে ওরা মনে হয় বুঝেছে আমরা ইউনিভার্সিটির পোলাপাইন তাই ভয়ে নিচ্ছে না।

খুব কৌতহল হল আসল ঘটনা জানার। বেয়ারাকে কাছে ডেকে মোলায়েম করে বললাম – নির্ভয়ে বল, আসল ঘটনা কি ?

সে বলে – আমাগো স্যারে টেকা নিতে না করসে।

বলি – তগো স্যার কেডা রে !

সে বলে – হ্যায় ত অপিস রূমে বইয়া রইসে।

আমরা উঠে সবাই মিলে অফিস রূমে গেলাম। গিয়ে দেখি কাঠের উচুঁ চেয়ারের ভিতর মাথা প্রায় লুকিয়ে বসে আছে কালো কুচকুচে একটা মানুষ। কাছে গিয়ে তাকে দেখে নিজেদের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিল না। সে আর কেউ নয় – আমাদের দুলাইল্লা। সে আমাদের দেখে এবার একদম নরম হয়ে গেল।

বলে –  দোস্ত, তগো পায়ে ধরি, ক্যাম্পাসে যায়া কইস না যে আমি হোটেল আলার পোলা। তাইল সবাই আমারে খেপাইবো।
আমরা আর হাসি না। দুলালের জন্য ভালবাসায় মন ভরে যায়।

ওকে বলি –  তুই হোটেলওয়ালা নাকি ঠেলাওয়ালা তাতে কার কি, আমাদের কি ? তুই যেমনই হস না, আমাদের বন্ধু ,সেটাই সবচেয়ে বড় কথা।

আরেকদিনের কথা। মগবাজার আউটার সার্কুলার রোডের উপর সেঞ্চুরি আর্কেড মার্কেট সবে নতুন হয়েছে। একতলায় খাবার দাবারের দোকানপাট। মমতাজ বেকারী তখন বিখ্যাত ছিল। একদিন আমার খালার সাথে ( বন্ধুর মা ) সেই মার্কেটে গিয়েছি। খালা বিস্কুট, পাউরুটি এসব কেনার জন্য মমতাজ বেকারীতে ঢুকল। তাকিয়ে দেখি আমাদের দুলাল কাউন্টারের পিছনে বসে আছে।
অবাক হয়ে বলি –  এইটাও তোদের নাকি !

বলে – হ বেটা, এইসবই তো আমার বাপ মমতাজ সাহেবের আদি ব্যবসা।

খালাম্মা যা কিনল, তার কিছুরই পয়সা নিলো না সে। তারপর সে যা করল আমি ভাবিও নাই এমন কিছু ঘটবে।

চট করে কাউন্টারে পিছন থেকে বের হয়ে খালাম্মার দিকে ইশারা করে আমাকে জিজ্ঞেস করে – অই মুরাইদা, উনি কেঠারে ?

আমি কিছু বলার আগেই খালাম্মা বলে – আমি ওর মা।

এবার দুলাল চোখ কপালে তুলে মাথায় হাত দিয়ে বলে –  খালাম্মা এইটা কি হুনাইলেন ! আপনের মত এত সুন্দর মাইনষের প্যাটে অর মত ( আমার কথা ) কাউঠা জন্ম নিলো ক্যাম্নে ? অরে দুনিয়াতে আইতে দিলেন ক্যান ?

ওর কথা শুনে খালাম্মা হাসতে হাসতে শেষ। এই হল আমাদের দুলাল।

তারপর এক সময় ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে বের হয়ে চাকুরির ধান্ধায় সবাই এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছি। অনেকের সাথে যোগাযোগ কমে গেছে। আমি এক সময় চাকুরি ছেড়ে বিদেশেও চলে যাই। তারপর দুলালের সাথে অনেক দিন আর যোগাযোগ ছিল না।

দেশে বেড়াতে গেলে স্টার রেস্তোরাঁর খুব নাম ডাক শুনি। অনেক শাখা হয়েছে। খাবারের মান অনেক উন্নত। খোঁজ নিয়ে জানি ,মমতাজ সাহেব মারা গেছেন। দুলাল পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেছে। সে’ই তাদের পারিবারিক রেস্তোঁরাকে এখন ফাইন ফূড চেইন বানিয়ে দেশব্যাপী অনেক শাখা খুলে ভাল ব্যবসা করছে। শুনে খুব ভাল লাগল।

এই বছর এপ্রিলে ঢাকায় গিয়েছিলাম। বন্ধুরা মিলে আডডা দিচ্ছিলাম। রেস্তোঁরা থেকে খাবার আনানো হল। জিজ্ঞেস করে জানলাম স্টারের খাবার। মাথায় দুস্টু বুদ্ধি খেলে গেল। একজনের কাছ থেকে দুলালের মোবাইল নাম্বার নিলাম।

তারপর কল দিয়ে বললাম –  দুলাল ,আমি মুরাদ, চিনছস ?

সে বলে – আবার জিগায়। কবে আইছস। কই তুই ?

বললাম সব – কবে এসেছি। তারপর বললাম –  দোস্ত , একটা ঝামেলা হয়ে গেছে। উদ্ধার কর।

বলে – কি হয়েছে, বলতো।

বললাম – বউ পোলাপান নিয়ে তোর রেস্টুরেন্টে খেতে এসেছি। খেয়ে দেখি পকেটে মানি ব্যাগ নাই। সাথে অন্য গেস্ট আছে। বাসায় গিয়ে পয়সা আনতে হবে। কিন্তু তোর লোকজন তো মনে হয় পয়সা ছাড়া বের হতে দিবে না।

সে উত্তেজিত হয়ে বলে – এইটা কোন ব্যাপার হইলো ,গাধা। কোনটায় আছস, আমারে ক’ । এক্ষন আমি উইরা আইসা পরুম।

আমি হাসি চেপে রেখে বলি –  দোস্ত, আরেকটা আর্জি আছে, রে। কমু নাকি ?

সে বলে – প্লিজ ,লজ্জা দেইস না। কইয়া ফালা।

আমি খুব গম্ভীর হয়ে বলি – দোস্ত, মাশয়াল্লাহ, তোর তো এখন অনেকগুলি ব্রাঞ্চ হয়েছে। যেখানে বইসা আছি, এইটা আমারে লেইখা দান কইরা দে না।
এইকথা শুনে সে বুঝে ফেলল, আমি এতক্ষন দুস্টামি করেছি। সে আর আমি দুইজনেই অট্ট্রহাসিতে ফেটে পড়লাম।

অনেক ভাল বন্ধু। বড় হৃদয়ের মানুষ। সমুদ্রের মত বিশাল। সদা হাসি খুশী মুখ। এমন মানুষের সাথে দেখা হলে বিষন্ন মন ও ভাল হয়ে যায়। অনেক ভালবাসি আমি আমার এমন বন্ধুকে। দেখা হয় না। কথা হয় না। কিন্তু বন্ধুত্ব অটুট। চির অটুট। লাভ ইউ, ম্যান।

১১ই ডিসেম্বর, ২০১১